যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক প্রধানমন্ত্রীকের স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়ে। চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক উল্লেখ করেছেন, "সাম্প্রতিক কিছু সপ্তাহে আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়ায় কিছু ভুল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।" তিনি লিখেছেন, "আমি নিশ্চিত যে আমি কোনো ভুল করিনি, তবে সন্দেহ দূর করতে আমি চাই আপনি এই বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্ত করে তার সত্যতা নিশ্চিত করুন।"
লেবার দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিক চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসের নেতৃত্বে চীনে ট্রেজারি প্রতিনিধিদলের সফরে যোগ দেবেন না। তিনি দেশে থেকেই তদন্তে সহযোগিতা করবেন।
টিউলিপ সিদ্দিক একাধিক সম্পত্তিতে বসবাস করছেন, এর মধ্যে রয়েছে কিংস ক্রসের কাছে একটি দুই বেডরুমের ফ্ল্যাট এবং হ্যাম্পস্টেডের একটি আলাদা বাড়ি।
দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, ২০০১ সালে ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ডে কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ নামে এক ডেভেলপার, যিনি শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিলেন। ২০০৪ সালে কোনো অর্থ ছাড়া টিউলিপ সিদ্দিক সেই ফ্ল্যাটের মালিক হন। দ্য মেইল জানায়, টিউলিপ সিদ্দিক আগে বলেছিলেন, ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মায়ের মাধ্যমে কেনা হয়েছিল এবং তাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
সানডে টাইমস পরে জানায়, টিউলিপ সিদ্দিকের বোনকে বিনা মূল্যে আরেকটি ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন মঈন গনি নামে এক আইনজীবী, যিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতেন। টিউলিপ এই ফ্ল্যাটে একসময় বসবাস করেছিলেন।
এছাড়া, ইস্ট ফিঞ্চলিতে টিউলিপ সিদ্দিক একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন, যার মূল্য ২.১ মিলিয়ন পাউন্ড, এবং এই বাড়িটি আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবদুল করিমের মালিকানাধীন।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগের কারণে তিনি আগে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশে কারাগারে থাকা আহমদ বিন কাসেম নামের এক ব্রিটিশ প্রশিক্ষিত আইনজীবী নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, "আমি হাসিনা সরকারের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখি না। আমি হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নের একজন লেবার এমপি, আমি একজন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য।"