জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ বলে সম্বোধনকারী দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান। এর আগে রবিবার (১০ নভেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আন্দোলনের সময় ১৭ জুলাই বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের চ্যাট ফাঁস হয়। সেখানে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবুন্নেসা লেখেন, ‘আমাদের এতগুলো শিক্ষক আহত হয়েছেন। আমরা না খেয়ে আছি। আমাদের খবর কেউ নিচ্ছে না।’ এর উত্তরে অধ্যাপক ফরিদ মন্তব্য করেন, ‘আরেকটু অপেক্ষা করুন। রাজাকারদের পরাজয় আসন্ন। আপনাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশ আগামী দিনে সঠিক পথে এগিয়ে যাবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
জানা যায়, গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশের হামলায় শিক্ষার্থীরা আহত হয়। এ ঘটনায় ২৯ সেপ্টেম্বর ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই উপাচার্য, প্রক্টরসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়। অধ্যাপক ফরিদ আহমদ ছিলেন মামলার ৮ নম্বর আসামি। পরে ৪ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একদল শিক্ষার্থী তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। সাজ্জাদুলের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে, একাধিক সিন্ডিকেট সদস্যের সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে অধ্যাপক বশির আহমেদ অনুষদের কোনো একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নেননি। তাই অনুষদের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে সিন্ডিকেটের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ৮ (২) ধারা অনুযায়ী অধ্যাপক বশিরকে ডিন পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলমকে ডিনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।