গত ১৫ বছরে দেশের ব্যাংক খাতে যে পরিমাণ মন্দ ঋণ সৃষ্টি হয়েছে, তা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল বা ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হতো বলে জানিয়েছে শ্বেতপত্র কমিটি। তাদের মতে, এই সময়ে ব্যাংক খাত ছিল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত, যেখানে মন্দ ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে।
শ্বেতপত্র কমিটি সতর্ক করে বলেছে, দেশের ব্যাংক খাত বর্তমানে একপ্রকার অর্থনৈতিক কৃষ্ণগহ্বরে প্রবেশ করেছে। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম, ঋণ কেলেঙ্কারি, ভুয়া ঋণ এবং ঋণের অপব্যবহারের মতো বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মদদে ব্যাংক দখলের সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এবং ব্যাংক খাত থেকে লুট করা বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের বাইরে পাচার হয়েছে।
গত জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এ ছাড়া পুনঃ তফসিলকৃত ঋণ ছিল ২ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, অবলোপন করা ঋণ ছিল ৭৫ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা, বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঋণ (স্পেশাল মেনশন) ছিল ৩৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা, এবং আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে খেলাপিমুক্ত ছিল ৭৬ হাজার ১৮৫ কোটি টাকার ঋণ। সব মিলিয়ে জুন মাস শেষে মোট মন্দ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩০ কোটি টাকা।