জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের তিন নেতার প্রকাশ্যে আসার ঘটনার প্রতিবাদে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের একটি দল মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে সংক্ষিপ্ত একটি সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূর-এ-তামিম। সেখানে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা মেহজাবিন বলেন, "জামায়াত-শিবির ১৯৭১ সালের গণহত্যার সহযোগী সংগঠন। ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের যেমন হত্যার দায় রয়েছে, তেমনি ৭১-এর গণহত্যার রক্তের দাগও জামায়াত-শিবিরের হাতে রয়ে গেছে। এই দায় তারা অস্বীকার করতে পারে না। আশির দশকেও ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে। সাধারণ মুক্তমনা শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালানোর পর এখন তারা আবার পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে।” শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, “১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তাদের আদর্শ ধারণ করে ২০২৪ সালে এসে কেউ স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারে না। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা আছে; ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর রাজনীতি করার অধিকার নেই।”
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, "ছাত্রশিবিরকে কোনোদিন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে বা শ্রমিক হত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনে দেখা যায়নি। তারা সব সময় বিভাজনের রাজনীতিতে লিপ্ত। রক্তের দাগ রয়েছে এমন সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আসতে হবে, সামাজিক কিংবা আইনি বিচারের মাধ্যমে। এ জন্য তাদের ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।”
প্রায় ৩৫ বছর পর গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিবিরের তিন নেতা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এসে সব দলের অংশগ্রহণে সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশের দাবি জানান। শিবিরের প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন সাকির সই করা বিবৃতিতে শাখা সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মুহিবের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়।