রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বিআরইউ) ক্যাম্পাসে শিক্ষক, কর্মচারী এবং অন্যান্য কর্মীদের অংশগ্রহণে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
এই সিদ্ধান্তটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় সোমবার, ২৮ অক্টোবর নেওয়া হয়, যা সভার পর বিআরইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক শওকত আলী ঘোষণা করেন।
এই নিষেধাজ্ঞা পূর্বের ১২ আগস্টের সিদ্ধান্তকে সম্প্রসারিত করে, যেখানে বিআরইউ-তে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কমানো। ৫ আগস্ট ছাত্র-গণ আন্দোলনের ফলে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তত ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, চারটি সরকারি কলেজ এবং ১০টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, শিক্ষক, কর্মচারী এবং অন্যান্য কর্মীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও ২৭টি প্রতিষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থাকা কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সুয়েট), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিআরইউ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরও অনেকে। এসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারী রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যেমন ডুয়েট ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।
মেডিকেল কলেজগুলোর মধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ এবং রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাড়া বাকি সকল মেডিকেল কলেজে ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারী রাজনীতিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তদ্রূপ, সান্তাহার কলেজেও ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষক-কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৮৪% শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্র রাজনীতির ওপর পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে মত দিয়েছেন। এর বিপরীতে ১৬% শিক্ষার্থী দলীয় রাজনীতিকে সংস্কার করা অবস্থায় ক্যাম্পাসে চেয়েছেন এবং মাত্র ০.২০% শিক্ষার্থী চান ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বর্তমান অবস্থায় বজায় থাকুক।