সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল বুধবার লন্ডনে পৌঁছেছেন। লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাঁকে ‘দ্য ক্লিনিক’ নামের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। বর্তমানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
কাতারের রাজপরিবারের পাঠানো একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে খালেদা জিয়া স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে) হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাকে স্বাগত জানান। দীর্ঘ সাত বছর পর মা-ছেলের এ পুনর্মিলনে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান এবং আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এক ঘণ্টার মধ্যেই তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে যান দ্য ক্লিনিকে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া চিকিৎসক দল হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সব তথ্য হস্তান্তর করেন।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, এবং আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি মঙ্গলবার রাতে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেন।
বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হজরত আলী খান খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীরা বিমানবন্দরের বাইরে তাঁকে স্বাগত জানাতে জড়ো হন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন। এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ঢাকায় এই হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর শরীরে সফল অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি এবং এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় দুই মাস সময় লাগতে পারে।
চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়া লন্ডনে ফিরে পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারেন। এরপর তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।