রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে ব্যবসায়ীর বাসায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ১১ জনের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থান গোপন করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেপ্তারের ৫৭ ঘণ্টা (গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত) পার হয়ে গেলেও এখনও এই পাঁচ আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি, অথচ গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের আদালতে পাঠানো বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে, বাকি ছয়জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আটজনের মধ্যে সাতজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, এবং একজনকে র্যাবের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ রাকিব খান রাতে জানান, ডিবির হেফাজতে থাকা ছয়জনের মধ্যে তিনজন র্যাব থেকে হস্তান্তরিত হয়েছে।
গত রোববার লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন যে, মোহাম্মদপুরে ডাকাতির ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজন বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য।
র্যাব জানিয়েছে, এ ঘটনায় তারা এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে তদন্ত করছে, এবং সেনাবাহিনী এখনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্যবসায়ী আবু বকরের বাসায় ডাকাতি ঘটে, যেখানে ৭৫ লাখ টাকা এবং ৭০ ভরি সোনা লুট হয়। এ ঘটনায় আবু বকর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ডাকাতিতে অন্তত ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে, যার মধ্যে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
এতে আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বর্তমান ও সাবেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ অপরাধীদের সমন্বয়ে একটি ডাকাত চক্র গড়ে উঠেছে। ডাকাতরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে এবং ভারী অস্ত্রের সঙ্গে নগদ অর্থ ও সোনা হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে লোকজনের কাছে যায়।
ডিবি একটি সূত্রে জানিয়েছে, তারা একজন ব্যক্তির সন্ধান করছে, যিনি ডাকাতির টাকা ও স্বর্ণালংকার ভাগাভাগির সঙ্গে জড়িত।