শেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্র সুমন মিয়া জটিল ত্রিভুজ প্রেমের বলি হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে শহরের সজবরখিলা মহল্লার রবিন নামের এক যুবকের বাড়ির উঠানের মাটির নিচ থেকে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রবিনের বাবা ফুরকান আলী। পুলিশ হত্যার রহস্য হিসেবে সুমন, আন্নি ও রবিনের ত্রিভুজ প্রেমকে দায়ী করছে।
মরদেহ উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম, ম্যাজিস্ট্রেট, শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একাধিক শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়রা।
সুমনের পরিবারের সদস্যরা জানান, সদর উপজেলার ঝগড়ার চরের বাসিন্দা আন্নি নামে এক তরুণী সুমনের সাথে প্রেম করতেন। সুমন ও আন্নি একসাথে কলেজে পড়াশোনা করতেন, তবে কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর আন্নি রবিন নামের আরেক যুবকের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এর পর আরও এক যুবকের সাথে তার সম্পর্ক তৈরি হয়, কিন্তু তার নাম এখনো জানা যায়নি। তবে আন্নি পুরনো প্রেমিক সুমনের সাথে যোগাযোগ রেখেছিল। বেশ কিছুদিন ধরে আন্নি সুমনকে বিয়ের জন্য ফুসলাতে থাকে, কিন্তু সুমন রাজি হয়নি। সাতদিন আগে আন্নি ফোন করে সুমনকে ডেকে নিয়ে যায় এবং তারপর থেকে সুমনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। দুই দিন আগে সুমনের পরিবার বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জানালে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয় এবং তদন্ত শুরু করে। ওই দিনই সন্দেহভাজন আন্নি ও তার বাবা আজিমদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটিত হয়। পরবর্তীতে পুলিশ আন্নির নতুন প্রেমিক রবিনকে গ্রেফতার করে এবং সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে যে, সুমন ও আন্নির মধ্যে ত্রিভুজ প্রেম নিয়ে আগেও বিবাদ হয়েছিল, এবং রবিনের ভয়ে সুমন আন্নি থেকে দূরে থাকত। বর্তমানে সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, সুমনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ পুরোপুরি সক্রিয় ছিল এবং উদ্ধার অভিযানে তৎপর ছিল। আন্নি ও তার বাবাসহ আরও দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে আরও কে কে জড়িত, জড়িত, তা তদন্ত সাপেক্ষে বেরিয়ে আসবে।